কুষ্টিয়া

অনিয়মে অনিশ্চিত কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ প্রকল্প

ঢাকা, ১৬ জানুয়ারি- ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের অনিয়ম-দুর্নীতি, সংশ্লিষ্ট গণপূর্ত, স্বাস্থ্য ও সংস্থাপন বিভাগের অব্যবস্থাপনা এবং অস্বচ্ছতার সঙ্গে যুক্ত স্থানীয় রাজনৈতিক প্রভাবে মুখ থুবড়ে পড়েছে নির্মাণাধীন কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ প্রকল্প। কাজের মেয়াদে দীর্ঘসূত্রিতায় নির্ধারিত প্রারম্ভিক প্রকল্প ব্যয় বৃদ্ধি পেয়েছে তিনগুণেরও বেশি। নির্মাণ পদ্ধতি লঙ্ঘন করায় ছাদ ধসে ঘটেছে শ্রমিক মৃত্যুর ঘটনাও। এসব ঘটনায় প্রকল্পটি সম্পন্নের নির্দিষ্ট সময়কাল অনিশ্চতায় পড়েছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে সময় বৃদ্ধির অনুমোদন চেয়ে একনেক সভায় উপস্থাপিত উন্নয়ন প্রস্তাবনাটি তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। এ ঘটনায় স্বপ্নের মেডিকেল কলেজ নিয়ে হতাশায় ভুগছে কুষ্টিয়াবাসী। এর জন্য প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা একে অন্যকে দুষছেন। সম্প্রতি প্রকল্প এলাকা সরেজমিন ঘুরে, স্থানীয় ও সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।

প্রকল্প সূত্র জানা যায়, প্রকল্প বাস্তবায়নকারী সংস্থা অনুমোদিত নকশা পরিবর্তন, দরবৃদ্ধি করে কার্যাদেশ দেওয়াসহ নানা অনিয়মের অভিযোগ উঠে। পরে সরকারের উন্নয়ন প্রকল্প ‘বাস্তবায়ন, পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগ’ (আইএমইডি)-এর প্রতিবেদনে এসব অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যায়। এছাড়া ওই প্রতিবেদনে প্রকল্পটির প্রায় সব ক্ষেত্রেই বেঁধে দেওয়া ব্যয়ের সীমা লঙ্ঘন করে অনুমোদন না নিয়েই অর্থ ব্যয় করে সরকারি ক্রয় আইনের ‘গুরুতর লঙ্ঘন’ করা হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়।

সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলন কুষ্টিয়ার সহসভাপতি কারশেদ আলম বলেন, ‘২০১২ সালের ৩ মার্চ একনেক সভায় ২৭৫ কোটি টাকা ব্যয়ে কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল প্রকল্পটি অনুমোদন লাভ করে। প্রকল্পটির নির্ধারিত নির্মাণকাল তিন বছর থাকলেও নয় বছর পেরিয়ে তা শেষ হয়নি। ইতিমধ্যে তৃতীয়বারের মতো সময় ও ব্যয় সম্প্রসারণ অনুমোদন পায়। প্রকল্প ব্যয় এখন প্রায় ৭০০কোটি টাকা, এতেও কাটছে না প্রকল্প সম্পন্নের অনিশ্চিত অন্ধকার।’

ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান বিশ্বাস ট্রেডিং কনস্ট্রাকশনের সাইট ইঞ্জিনিয়ার সিবেশ্বর মালো বলেন, ‘সংশ্লিষ্ট গণপূর্ত বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্র্তৃপক্ষ সময়মতো ড্রয়িং, ডিজাইনসহ আনুষঙ্গিক নির্দেশনা দিতে অধিকাংশ সময়ই বিলম্ব করেন। এতে নির্দিষ্ট সময়ে কাজ শেষ করা সম্ভব হচ্ছে না।’

আরো পড়ুন:  রোহিঙ্গাদের পর ভাসানচরে এবার বিদেশি সংস্থায় কর্মরতদের জন্য ভবন

কুষ্টিয়া জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আজগর আলী বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে ঝুলিয়ে রাখা কুষ্টিয়াবাসীর স্বপ্নের মেডিকেল কলেজ নির্মাণ প্রকল্পটি যাদের কারণে বারবার হোঁচট খাচ্ছে, তাদের চিহ্নিত করে বিচারের আওতায় আনার দাবি করছি।’

কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. সরোয়ার জাহান বলেন, ‘অস্বাস্থ্যকর, পরিত্যক্ত ও জরাজীর্ণ আবাসন সংকটে থাকা শিক্ষার্থীরা যেমন ঝুঁকিপূর্ণ জীবনযাপন করছে, তেমনি তাদের শিক্ষাদানসহ অ্যাকাডেমিক কার্যক্রমে প্রাসঙ্গিক আয়োজন সংকুলান করতে পারছি না।’ এ সময় বিদ্যমান পরিস্থিতির দ্রুত সমাধান দাবি করেন তিনি।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে কোনো ধরনের মন্তব্য করা থেকে বিরত থাকেন সংশ্লিষ্ট গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী আরিফুল ইসলাম।

সূত্র: দেশ রুপান্তর

আর/০৮:১৪/১৬ জানুয়ারি

Back to top button