জাতীয়

ফ্যাসিস্টদের পিএসসির সদস্য করা শহীদের রক্তের সঙ্গে বেইমানি

ঢাকা, ১০ জানুয়ারি – বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশনে (পিএসসি) আওয়ামী ফ্যাসিস্টদের ৩ জন সহযোগীকে নিয়োগকে ষড়যন্ত্র উল্লেখ করে তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে জামায়াতে ইসলামী। দলটি বলছে, নতুন নিয়োগ দেওয়া আটজনের মধ্যে যে তিনজনের নাম উচ্চারিত বেশি হচ্ছে তারা চিহ্নিত, ফ্যাসিস্ট সরকারের ঘনিষ্ঠ। পিএসসির সদস্য হিসেবে তাদের অন্তর্ভুক্ত করা হলে সরাসরি ছাত্র-জনতার আন্দোলনের শহীদদের রক্তের সঙ্গে বেইমানি করা হবে।

বৃহস্পতিবার (৯ জানুয়ারি) সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার এক বিবৃতিতে এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ পাবলিক সার্ভিস কমিশনে নিয়োগ দেওয়ার জন্য প্রস্তাবিত যেসব নাম গণমাধ্যমে প্রচারিত হয়েছে তা দেখে জনগণ বিস্মিত। মাত্র কিছু দিন হল ছাত্র-জনতার রক্তের বিনিময়ে বাংলাদেশ ফ্যাসিস্ট সরকারের কবল থেকে মুক্তি লাভ করেছে। জনগণের প্রত্যাশা হল সৎ, যোগ্য ও দেশপ্রেমিক লোকদেরকে পাবলিক সার্ভিস কমিশনে নিয়োগ দিয়ে নিয়োগ প্রক্রিয়াকে স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ করা হবে। কিন্তু তার স্থলে ফ্যাসিবাদের দোসরদের গুরুত্বপূর্ণ পদে বসানোর যে উদ্যোগ নেয়া হয়েছে তা জনগণকে হতাশ করেছে।

প্রস্তাবিত তিন জনের একজন হলেন, পতিত স্বৈরাচারের সরাসরি সুবিধাভোগী। আরেকজন আয়না ঘর সংশ্লিষ্ট ও নারী কেলেঙ্কারির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। তিনি আওয়ামী লীগের সুবিধা ভোগ করে জনগণের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে। প্রস্তাবিত অপরজন শহীদ মুহাম্মাদ কামারুজ্জামানের বিরুদ্ধে দায়ের করা সরকারের সাজানো মামলায় মিথ্যা সাক্ষ্য প্রদান করে বিচারিক হত্যাকাণ্ডে সহযোগিতা করেছেন।

এসব চিহ্নিত ব্যক্তিদেরকে পিএসসি-এর সদস্য হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হলে সরাসরি শহীদদের রক্তের সঙ্গে বেইমানি করা হবে। অবিলম্বে এসব ব্যক্তিদের নাম অন্তর্ভুক্ত না করার জন্য আমরা অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।

এখানে উল্লেখ্য যে, ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর আগের চেয়ারম্যান ও সদস্যরা পদত্যাগ করেন। এরপর চেয়ারম্যানসহ নতুন সদস্য নিয়োগ দেয় সরকার। এরপর আট সদস্য নিয়োগ দেয় সরকার। বর্তমান পিএসপির চেয়ারম্যানের দায়িত্বে আছেন অধ্যাপক মোবাশ্বের মোনেম। সর্বশেষ গত ২ জানুয়ারি নতুন সদস্য হিসেবে নিয়োগ পান অধ্যাপক শাহনাজ সরকার, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এ এফ জগলুল আহমেদ, অধ্যাপক সৈয়দা শাহিনা সোবহান, মো. মুনির হোসেন এবং সাব্বির আহমেদ চৌধুরী। নতুন নিয়োগ পাওয়া কয়েকজন সাবেক সরকারের ঘনিষ্ঠজন হওয়ায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক সমালোচনা শুরু হয়।

এরপরই সরকারি কর্ম কমিশনে (পিএসসি) নিয়োগ পাওয়া সদস্যদের শপথ স্থগিত করা হয়। তাদের বৃহস্পতিবার(৯ জানুয়ারি) তাদের শপথ নেবার কথা ছিল।

পিএসসি সূত্রে জানা গেছে, সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলের কার্যালয়ে শপথ স্থগিত চেয়ে আজ বুধবার চিঠি পাঠায় পিএসসি। পরে পিএসসির অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে নতুন সদস্যদের শপথ স্থগিত করে সুপ্রিমকোর্ট।

পিএসসির চিঠিতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশনে চলমান নিয়োগ পরীক্ষার জরুরি কাজের কারণে নবনিয়োগপ্রাপ্ত সদস্যদের শপথ গ্রহণের পূর্বনির্ধারিত ৯ জানুয়ারি স্থগিত করার জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হলো।

সূত্র: ঢাকা পোস্ট
আইএ/ ১০ জানুয়ারি ২০২৫

 


Back to top button