জাতীয়

আ.লীগ স্বাধীনতার শক্তি নয়, তারা পলাতক শক্তি

ঢাকা, ২৭ জানুয়ারি – জনগণের ভোটে বিজয়ী হয়ে বিএনপি সরকার গঠন করলে দেশ এক মাসের মধ্যে স্থিতিশীল হয়ে যাবে বলে দাবি করেছেন দলটির ভাইস চেয়ারম্যান নিতাই রায় চৌধুরী।

তিনি বলেন, বর্তমানে যে অন্তর্বর্তী সরকার আছে তাদের রাজনৈতিক প্রজ্ঞা নেই। সে কারণে তাদেরকে অস্থিতিশীল করা খুবই সহজ। গত ৫ মাসে তারা নানা সংকটে পড়ে গেছেন। সেই সংকট থেকে উত্তরণের জন্য জনগণের ভোটে নির্বাচিত একটি সরকারের বিকল্প নেই।

সোমবার (২৭ জানুয়ারি) দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী সাংস্কৃতিক দলের উদ্যোগে ‘মুক্তিযুদ্ধ : শহীদ জিয়া’- শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে নিতাই রায় এসব কথা বলেন। বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ৮৯তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে এ আলোচনা সভা হয়।

নিতাই রায় চৌধুরী বলেন, আওয়ামী লীগ স্বাধীনতার শক্তি নয়, তারা পলাতক শক্তি। দেশের স্বাধীনতার ঊষালগ্নে যখন যুদ্ধ শুরু হয়, তখনও তারা পালিয়ে গিয়েছিল এবং ’২৪-এর আন্দোলনেও তারা পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়। বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার আমাদের দীর্ঘ ১৬ বছরের আন্দোলনের ফসল। তারা যে সংস্কারের কথা বলছেন, এটা বিএনপির ইচ্ছার বাইরে নয়। বিএনপি তো আগেই ৩১ দফা সংস্কার কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। সংস্কার অবশ্যই বিএনপি চায়। কিন্তু মনে রাখতে হবে, সংস্কার একটি চলমান প্রক্রিয়া। সংস্কারের দোহাই দিয়ে এই ‘দুর্বল’ অন্তর্বর্তী সরকার বেশিদিন ক্ষমতায় থাকলে চক্রান্তকারীরা দেশের ক্ষতি করার সুযোগ পাবে অনেক বেশি।

তিনি বলেন, এই সরকারের দায়িত্ব হচ্ছে নিরপেক্ষতা বজায় রেখে দ্রুত নির্বাচন দেওয়া। আর যতই সংস্কারের কথা বলা হোক না কেন, সেটা তো পার্লামেন্ট ছাড়া সম্ভব নয়। সংস্কার আমাদের কথা, আর বর্তমানে যারা সংস্কারের কথা বলছেন- তাদের সঙ্গে আমাদের কোনো বিরোধ নেই। কিন্তু ছাত্র প্রতিনিধিরা বিএনপি এবং তার শীর্ষ নেতাদের নিয়ে যে ধরনের মন্তব্য করছেন, সেটা কাম্য নয়। এসব কথার কারণেই মূলত সরকার বেকায়দায় পড়ে যাবে। আর তার সুযোগ নেবে পালিয়ে যাওয়া অপশক্তি এবং পার্শ্ববর্তী চক্রান্তকারী দেশ।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন বলেন, জিয়াউর রহমান ইতিহাসকে ধারণ করেন এবং তিনি এখনও প্রাসঙ্গিক। দেশ কোনো সংকটে পড়লে, সেই সংকট থেকে উত্তরণের জন্য তাকেই অনুসরণ করতে হবে।

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ হল শরণার্থী মুক্তিযোদ্ধা আর বিএনপি হলো রণাঙ্গণের মুক্তিযোদ্ধা। বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার আমাদের প্রতিপক্ষ নয়, বরং পরিপূরক। তারা আমাদের আন্দোলনের ফসল। আমরা তাদের কাজে সব রকম সহযোগিতা করতে চায়। কিন্তু সংস্কারের নামে যদি অতিরিক্ত সময়ক্ষেপণ করা হয়, তাহলে দেশ অনেক বেশি রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সংকটে পড়ে যাবে। আর সেই সংকট থেকে উত্তরণ এই দুর্বল সরকারের পক্ষে সম্ভব নয়। বরং ষড়যন্ত্রকারীরা এর থেকে সুযোগ নেওয়ার চেষ্টা করবে।

বিশিষ্ট সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব রেজাবুদৌলা চৌধুরী বলেন, জিয়াউর রহমান ছাত্রদের নিয়ে সমুদ্র ভ্রমণে যান। তিনি তখন ছাত্রদের উদ্দেশে বলেন, তোমরা পাহাড় দেখেছো, সমতল দেখেছো, কিন্তু সমুদ্র দেখোনি। আমাদের সমুদ্রতলে অনেক সম্পদ রয়েছে। তোমরা এই সম্পদ উত্তোলন করে দেশকে সমৃদ্ধ করবে।

লেখক, কলামিস্ট কালাম ফয়েজী বলেন, যারা বলেন- ভারত পাকিস্তানকে দ্বিখণ্ডিত করেছে, তারা মূলত বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধকে স্বীকার করেন না। মনে রাখতে হবে, ভারতবর্ষে যতগুলো স্বাধীন দেশ আছে, তাদের মধ্যে শুধু বাংলাদেশই যুদ্ধ করে স্বাধীনতা অর্জন করে। এই স্বাধীনতা কারও দয়ার দান নয়। দেশের মানুষ যুদ্ধ করেছে বলেই ভারত আমাদের সহযোগিতা করেছে।

জাতীয়তাবাদী সাংস্কৃতিক দলের সভাপতি হুমায়ুন কবির বেপারীর সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ মোজাম্মেল হোসন শাহিনের পরিচালনায় এতে আরও বক্তব্য রাখেন- সিনিয়র সাংবাদিক মুস্তফা কামাল মজুমদার, নাট্যকার ও বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য বাবুল আহমেদ, যুবদলের সাবেক কেন্দ্রীয় নেতা এস এম মিজানুর রহমান, দৈনিক খোলাবাজার সম্পাদক মো. জহিরুল ইসলাম কলিম, নবী হোসেন নবী, এস এম কমর উদ্দিন, ইব্রাহিম হোসেন, সাংস্কৃতিক দলের এম. আহমেদ খান মন্টু, আমিনুল হক শাহিন, মো. মামুন, কিশোরগঞ্জ জেলা সাংস্কৃতিক দলের আলমগীর হোসেন আলম প্রমুখ।

সূত্র: কালবেলা
আইএ/ ২৭ জানুয়ারি ২০২৫


Back to top button