পশ্চিমবঙ্গ

কলকাতার ঈদ অনুষ্ঠানে সনাতন ধর্ম নিয়ে মন্তব্য, বিতর্কের মুখে মমতা

কলকাতা, ০২ এপ্রিল – কলকাতার রেড রোডে আয়োজিত ঈদের অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জীর মন্তব্যকে কেন্দ্র করে পশ্চিমবঙ্গের রাজনৈতিক অঙ্গন সরগরম হয়ে উঠেছে। বিশেষ করে, ‘গন্দা ধর্ম’ (নোংরা ধর্ম) শব্দটি ব্যবহারের কারণে বিতর্ক ছড়িয়েছে। বিরোধীরা দাবি করছে, তার বক্তব্য সনাতন ধর্মের প্রতি অবমাননাকর, যদিও তৃণমূল কংগ্রেস বলছে, তার বক্তব্যকে ‘বিকৃত’ করে উপস্থাপন করা হচ্ছে।

ঈদের মঞ্চে দাঁড়িয়ে মমতা ব্যানার্জী বলেন, ‘আমি রামকৃষ্ণের ধর্ম মানি, স্বামী বিবেকানন্দের ধর্ম মানি। কিন্তু আমি জেনে শুনে একটা নোংরা ধর্ম, যেটা এই জুমলা পার্টিরা বানিয়েছে, সেটা মানি না। ওটা হিন্দু ধর্ম বিরোধী।’

এই বক্তব্যের মাধ্যমে তিনি মূলত বিজেপির বিরুদ্ধে ধর্মের রাজনৈতিক ব্যবহারের অভিযোগ তুলেছেন। একই সঙ্গে তিনি ধর্মনিরপেক্ষতার পক্ষে সওয়াল করে বলেন, ‘পশ্চিমবঙ্গে ধর্মীয় বিভাজন সহজ নয়। আমরা দাঙ্গা চাই না। এটা ওদের পরিকল্পনা, ওদের গেম। আপনারা এতে পা দেবেন না।’

মমতা ব্যানার্জীর এই বক্তব্যের পরপরই বিজেপির নেতা শুভেন্দু অধিকারী প্রশ্ন তোলেন, ‘তিনি কোন ধর্মকে নোংরা বলেছেন? সনাতন হিন্দু ধর্ম?’ বিজেপির অমিত মালব্য মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে ‘হিন্দুদের অপমান’ করার অভিযোগ তুলেছেন।

সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিমও মমতা ব্যানার্জীর সমালোচনা করে বলেন, ‘তৃণমূল এবং বিজেপি দুই দলই ধর্মের রাজনীতি করে। রামনবমী এলেই এরা একসঙ্গে হয়ে যায়।’ কংগ্রেস নেতা অধীর রঞ্জন চৌধুরী এই মন্তব্যকে ‘রাজনৈতিক কৌশল’ হিসেবে দেখছেন।

তৃণমূল কংগ্রেসের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ বলেছেন, ‘মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য বিকৃত করে উপস্থাপন করা হচ্ছে। তিনি বিজেপির ভুয়া হিন্দুত্বের বিরুদ্ধে বলেছেন, সনাতন ধর্মের বিরুদ্ধে নয়। তিনি সব ধর্মের প্রতি শ্রদ্ধাশীল।’

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, ভোটের সমীকরণকে মাথায় রেখে মমতা ব্যানার্জী হিন্দু ও মুসলিম উভয় ভোটারদের কাছে বার্তা দিতে চেয়েছেন। অধ্যাপক বিশ্বনাথ চক্রবর্তীর মতে, ‘মমতা ব্যানার্জীর তোষণের রাজনীতির ফলে বিজেপি রাজ্যে জায়গা তৈরি করতে পেরেছে। এবার তিনি হিন্দু ভোট ধরে রাখার কৌশল নিয়েছেন।’

হিন্দুত্ববাদী রাজনীতির গবেষক স্নিগ্ধেন্দু ভট্টাচার্য বলেন, ‘মমতা ব্যানার্জী বাংলার সেকুলার-হিন্দুদের হারাতে চান না। তিনি বারবার হিন্দুদের জন্য কী করেছেন তা বলছেন, আবার মুসলিম ভোট ব্যাঙ্ককেও সন্তুষ্ট করতে চাইছেন।’

সূত্র: একুশে টেলিভিশন
আইএ/ ০২ এপ্রিল ২০২৫


Back to top button

দয়া করে ওয়েবসাইটে বিজ্ঞাপনের অনুমতি দিন

দেখে মনে হচ্ছে আপনি কোনও বিজ্ঞাপন ব্লকার ব্যবহার করছেন। আমরা বিজ্ঞাপনের উপর ভরসা করি ওয়েবসাইটের ফান্ডের জন্য