বরগুনা

প্রেমের টানে দুই যুগ পর বরগুনায় আসলেন ডেনিশ নারী

বরগুনা, ১১ এপিল – ভালোবাসার টানে ডেনমার্ক থেকে বরগুনায় প্রাক্তন স্বামীর কাছে ফিরেছেন রোমানা মারিয়া বসি নামের এক ড্যানিশ নারী। নানা বাধা পেরিয়ে দীর্ঘ ২৪ বছর পর ভালোবাসার প্রিয় মানুষ মাহবুবুল আলম মান্নুর কাছে ফিরে তিনি প্রমাণ করেছেন প্রকৃত ভালোবাসা কখনোই হারিয়ে যায় না। আর এ ঘটনায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে এলাকাজুড়ে। বরগুনা পৌরসভার সদর থানা সংলগ্ন এলাকার বাসিন্দা মান্নু দৈনিক আমাদের সময়ের বরগুনা প্রতিনিধি হিসেবে কর্মরত আছেন।

বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল) ডেনমার্ক থেকে ঢাকায় এসে বিকেল ৫টার দিকে মাহবুবুল আলম মান্নুর সঙ্গে বাসযোগে বরগুনায় আসেন রোমানা মারিয়া বসি। পরে সন্ধ্যায় মান্নুর পরিবারের সদস্যদের উপস্থিতিতে পুনরায় তারা বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ১৯৯৭ সালে প্রবাসে থাকাকালীন ডেনমার্কের বাসিন্দা রোমানা মারিয়া বসিকে ভালোবেসে বিয়ে করে বাংলাদেশে নিয়ে আসেন বরগুনার মাহবুবুল আলম মান্নু। এর তিন বছর পর ২০০০ সালের দিকে মারিয়া আবারও ডেনমার্কে চলে যায়। তবে কয়েক মাস পর মান্নুরও ডেনমার্কে যাওয়ার কথা থাকলেও বিভিন্ন কারণে তিনি আর যেতে পারেননি। এতে স্বামী-স্ত্রী দুজন দুই দেশে থাকলেও ২০০৩ সাল পর্যন্ত তাদের মধ্যে যোগাযোগ অব্যাহত থাকে। পরবর্তীতে পরিবারের চাপে রোমানা অন্যত্র বিয়ে করলে মান্নুর সঙ্গে সকল যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়। অপরদিকে মান্নুকেও পরিবারের সদস্যরা দ্বিতীয় বিয়ে করতে বললে তিনি রোমানার ভালোবাসা ত্যাগ করতে পারেননি। প্রিয়তমার প্রতীক্ষায় প্রায় ২৪ বছর কাটিয়েছেন নিঃসঙ্গতায়। সর্বশেষ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে খোঁজাখুজির একপর্যায়ে রোমানা আবারও খুঁজে পায় মান্নুকে। দুজনের মধ্যে আলাপচারিতায় পুনরায় বিয়ে করার সম্মতিতে বাংলাদেশে চলে আসেন তিনি। আর এ ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হলে রোমানাকে দেখতে মান্নুর বাড়িতে ভিড় করছেন মান্নুর বিভিন্ন সহকর্মীসহ স্থানীয় বাসিন্দারা।

মাহবুবুল আলম মান্নুর বড় বোন পিয়ারা বেগম বলেন, এর আগে রোমানা যখন মান্নুর সঙ্গে ছিল আমাদের সঙ্গে তার ভালোই সম্পর্ক ছিল। ডেনমার্ক চলে যাওয়ার পরও আমাদের সঙ্গে কয়েক বছর পর্যন্ত যোগাযোগ ছিল। দীর্ঘদিন পর মান্নু যখন আমাদের জানায় রোমানাকে সে ফিরে পেয়েছে এবং বাংলাদেশে আসতে চায়, আমরা তাকে আসার জন্য বলি। রোমানা ফিরে আসায় আমারা আনন্দিত।

রেহানা বেগম নামে মান্নুর এক ভাগনি বলেন, আমরা মামাকে বহুবার বিয়ের কথা বলেছি। কিন্তু তিনি কখনোই রাজি হননি। পরে আমরা বুঝতে পেরেছি তার ভালোবাসার মানুষকে তিনি ভুলতে পারেননি। পরে আমরা আর তাকে বিয়ের জন্য না বললেও স্ত্রী রোমানাকে ফিরে পাওয়ার জন্য চেষ্টা করতে বলেছি। এ ছাড়া আমরাও আল্লাহর কাছে চেয়েছি যাতে আবারও তাদের মধ্যে যোগাযোগ হয়।

এ বিষয়ে মাহবুবুল আলম মান্নু বলেন, বিয়ের পর ২০০০ সালে এক প্রকার জোর করেই রোমানাকে ডেনমার্কে পাঠিয়ে দিই। পরে আমার যাওয়ার কথা থাকলেও বিভিন্ন কারণে আর যাওয়া হয়নি। এ ছাড়া আমি কখন যেতে পারব তা বলতে না পেরে ওর বাবা-মায়ের কথা অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নিতে বলি। পরে তিন বছর পর্যন্ত আমার সঙ্গে যোগাযোগ রেখে বাবা-মায়ের সিদ্ধান্তে আমাকে ডিভোর্স দিয়ে অন্যত্র বিয়ে করে রোমানা। পরবর্তীতে ৭ থেকে ৮ বছর আগে ওই স্বামীর সঙ্গে মনের মিল না হওয়ায় তাকে ডিভোর্স দিয়ে পুনরায় আমার সঙ্গে যোগাযোগ করতে চেষ্টা শুরু করে রোমানা। পরে ফেসবুকে আমার আইডি খুঁজে পেলে গত জানুয়ারি মাস থেকে আবারও রোমানার সঙ্গে কথোপকথন শুরু হয়। একপর্যায়ে আমাকে দ্বিতীয়বার বিয়ে করতে সম্মতি জানিয়ে রোমানা বাংলাদেশে চলে এসেছে।

সূত্র: ঢাকা পোস্ট
আইএ/ ১১ এপিল ২০২৫


Back to top button

দয়া করে ওয়েবসাইটে বিজ্ঞাপনের অনুমতি দিন

দেখে মনে হচ্ছে আপনি কোনও বিজ্ঞাপন ব্লকার ব্যবহার করছেন। আমরা বিজ্ঞাপনের উপর ভরসা করি ওয়েবসাইটের ফান্ডের জন্য