সুনামগঞ্জ

স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি বৃষ্টিপাতের শঙ্কায় সুনামগঞ্জে তিন অধিদপ্তরের ছুটি বাতিল

সুনামগঞ্জ, ১৫ এপ্রিল – আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী আগামী ২১ এপ্রিল পর্যন্ত বাংলাদেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে স্বাভাবিকের চেয়ে থেকে বেশি বৃষ্টিপাত হতে পারে। বেশি বৃষ্টিপাত হলে বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি না হলেও উত্তর-পূর্বাঞ্চলের জেলা সুনামগঞ্জের নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। তাই ৮০ ভাগ বা এর চেয়ে বেশি পাকা ধান কাটার অনুরোধ জানিয়েছেন, সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক ড. মোহাম্মদ ইলিয়াস মিয়া।

হাওরের শতভাগ বোরো ফসল কাটা শেষ না হওয়া পর্যন্ত সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসন, পানি উন্নয়ন বোর্ড ও কৃষি অধিদপ্তরের সবধরনের ছুটি বাতিল করা হয়েছে বলে জানান তিনি।

মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) বিকেলে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে হাওরের বোরো ধান দ্রুত কর্তন ও আগাম বন্যায় করণীয় সম্পর্কে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় সভায় এসব কথা বলেন জেলা প্রশাসক।

সভায় তিনি বলেন, ১৪ এপ্রিল থেকে ২১ এপ্রিল পর্যন্ত সুনামগঞ্জে সপ্তাহব্যাপী ভারী বৃষ্টিপাতের শঙ্কা রয়েছে। এতে হাওরের বোরো ধান ঝুঁকির মধ্যে পড়তে পারে। তাই ৮০ ভাগ বা এর বেশি পাকা ধান কৃষকদেরকে কেটে গোলায় তোলার অনুরোধ জানানো হচ্ছে। উপজেলা প্রশাসন, কৃষি বিভাগ ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা কৃষকদের সচেতন করছেন এবং আবহাওয়ার বার্তাটি পৌঁছে দিবেন।

অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) সমর কুমার পালের সঞ্চালনায় সভায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের সুনামগঞ্জের পওর শাখা-১ এ নির্বাহী প্রকৌশলী মামুন হাওলাদার, জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক মোস্তফা ইকবাল আজাদসহ জেলা প্রশাসকের কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের বরাত দিয়ে সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের পওর শাখা-১ এ নির্বাহী প্রকৌশলী মামুন হাওলাদার সভায় বলেন, আগামী ২১ পর্যন্ত সুনামগঞ্জ ও পার্শ্ববর্তী ভারতের চেরাপুঞ্জিতে বেশি বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এতে করে সুনামগঞ্জের নদ-নদীর পানি বাড়তে পারে। বিপৎসীমা অতিক্রম বা বন্যার আশঙ্কা না থাকলেও হাওর এলাকার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হতে পারে। তাই হাওরের পাকা ধান দ্রুত কেটে তোলা প্রয়োজন।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মোস্তফা ইকবাল আজাদ বলেন, জেলার সকল হাওরেই বোরো ধান কাটা শুরু হয়েছে। মঙ্গলবার পর্যন্ত হাওরে প্রায় ১৪ হাজার হেক্টর জমির ধান কাটা হয়েছে। যা গড়ে সাড়ে ৮ ভাগ, শ্রমিকের পাশাপাশি ১৬০ টি হারভেস্টার, ১৫ টি রিপার দিয়ে ধান কাটা চলছে। বাহিরের জেলা থেকে আরও কিছু হারভেস্টার এসেছে। আগামী সপ্তাহে পুরোদমে ধান কাটা চলবে। ভারী বৃষ্টির শঙ্কায় হাওরের যেসব জমির ৮০ ভাগ পাকা ধান পাকা সেগুলো দ্রুত কেটে তোলার জন্য আমরা মাঠ পর্যায়ে কৃষকদের পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছি।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরর তথ্য অনুযায়ী, চলতি বোরো মৌসুমে সুনামগঞ্জের ১২ উপজেলার ১৩৭টি ছোট-বড় হাওরে বোরো চাষাবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল ২ লাখ ২৩ হাজার ৪১০ হেক্টর জমি। কিন্তু চাষাবাদ হয়েছে ২ লাখ ২৩ হাজার ৫০২ হেক্টর। লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৯২ হেক্টর বেশি জমি চাষ হয়েছে। ১১৬ টি জাতের ধান চাষ করা হয়েছে। ধানের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১৩ লাখ ৯৬ হাজার ৮০ মে. টন। যার বাজার মূল্য প্রায় ৫ হাজার ২ কোটি ৮০ লাখ টাকা।

সূত্র: আরটিভি নিউজ
এনএন/ ১৫ এপ্রিল ২০২৫

 


Back to top button

দয়া করে ওয়েবসাইটে বিজ্ঞাপনের অনুমতি দিন

দেখে মনে হচ্ছে আপনি কোনও বিজ্ঞাপন ব্লকার ব্যবহার করছেন। আমরা বিজ্ঞাপনের উপর ভরসা করি ওয়েবসাইটের ফান্ডের জন্য