জাতীয়

সৌদি রাষ্ট্রদূত ঈসার সঙ্গে আমার বিয়ে হয়, কেবল তার সঙ্গেই সম্পর্ক

ঢাকা, ১৭ এপ্রিল – ঢাকায় নিযুক্ত সৌদি আরবের রাষ্ট্রদূত ঈসা বিন ইউসুফ আল দুহাইলানকে ব্ল্যাকমেইল করে ৫ মিলিয়ন ডলার দাবির অভিযোগ উঠেছে আলোচিত মডেল মেঘনা আলমের বিরুদ্ধে। কিন্তু আদালতে এ ব্যাপারে শুনানি চলাকালে ওই কূটনীতিককে নিজের স্বামী বলে দাবি করেছেন মেঘনা।

বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) সকালে তাকে এবং তার সহযোগী হিসেবে আটক দেওয়ান সমিরকে হাজির করা হয় ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মাসুম মিয়ার আদালতে। এরপর বিদেশি রাষ্ট্রদূতদেরকে সুন্দরী মেয়ে দিয়ে প্রেমের ফাঁদে ফেলে ব্ল্যাকমেইলিংয়ের অভিযোগে রাজধানীর ধানমন্ডি থানায় দায়ের করা প্রতারণা মামলায় তাদেরকে গ্রেপ্তার দেখানোর জন্য আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা। শুনানি শেষে ম্যাজিস্ট্রেট মাসুম মিয়া তাদেরকে এ মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোর নির্দেশ দেন।

শুনানিকালে রাষ্ট্রপক্ষে মহানগর দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর বলেন, এই আসামিরা অভিনব কৌশল অবলম্বন করে বিদেশি রাষ্ট্রদূতসহ অ্যাম্বাসিগুলোতে কর্মরত বিদেশি নাগরিকদের হানি ট্র্যাপে ফেলে বিপুল অর্থ বাগিয়ে নেওয়ার জন্য চক্র দাঁড় করিয়েছেন। তারা দীর্ঘদিন ধরে এসব প্রতারণা করে আসছেন। সবশেষ তারা সৌদি রাষ্ট্রদূত ঈসাকে ফাঁসানোর চেষ্টা করেন এবং তার কাছ থেকে ৫ মিলিয়ন ডলার দাবি করেন বলে অভিযোগ রয়েছে।

এ সময় মেঘনা আলমকে মেঘলা আলম সম্বোধন করে শুনানি করার এক পর্যায়ে আসামি মেঘনা তার নাম ঠিকভাবে উচ্চারণ করার জন্য বলেন, আমার নাম মেঘনা আলম, মেঘলা নয়।

এরপর বিচারক আসামিদের পক্ষে কোনো আইনজীবী আছেন কিনা জানতে চান। মেঘনা আলম আদালতকে বলেন, আমাদের কোনো আইনজীবী নেই। এরপর তিনি কথা বলতে অনুমতি চান।

আদালত অনুমতি দিলে তিনি বলেন, আমার নাম মেঘনা, মেঘলা নয়। সৌদি রাষ্ট্রদূতের কথা বলা হচ্ছে। আমার প্রশ্ন যে কেউ চাইলে কি সৌদি রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে দেখা করতে পারে? আপনারা কি তার কাছে যেতে পারবেন?

এ পর্যায়ে বিচারক তাকে থামিয়ে মামলা সম্পর্কে কিছু বলার আছে কিনা জানতে চান। এরপর মেঘনা আলম বলেন, আমাকে বিনা বিচারে জেলে পাঠানো হয়েছে। আমাকে বলা হয়েছে কোনো আইনজীবী পাবেন না। বিষয়টি হলো রাষ্ট্রদূত ঈসার সঙ্গে আমার একমাত্র সম্পর্ক, আর কারও সঙ্গে না। সৌদি রাষ্ট্রদূত ঈসার সঙ্গে আমার বিয়ে হয়। ঈসা অভিযোগ করেন, আমি নাকি তার বাচ্চা নষ্ট করে ফেলেছি। এটা মোটেও সত্য না। এ বিষয়ে আমি ঈসার সঙ্গে কথা বলি। তাকে এসব তথ্য ছড়ানো থেকে বিরত থাকতে বলি। এসব বিষয় নিয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ডিজি শফিকুরের সঙ্গে কথা বলি। এরপরেই পুলিশ আমাকে গ্রেপ্তার করে।

অন্যদিকে মেঘনার সহযোগী হিসেবে আটক দেওয়ান সমির আদালতকে বলেন, আমাকে মেঘনা আলমের বয়ফ্রেন্ড বলা হচ্ছে। এটা ভুল তথ্য, তার সঙ্গে আমার কোনো সম্পর্ক নেই। আমি সাধারণ একজন মানুষ। দীর্ঘদিন প্রবাসে ছিলাম। আমি একজন রেমিট্যান্স যোদ্ধা। আমি মামলার এসব ঘটনার কিছুই জানি না।

এরপর ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মাসুম মিয়া তাদের দুইজনকে গ্রেপ্তার দেখান। একইসঙ্গে দেওয়ান সমিরের পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

গত ৯ এপ্রিল রাতে মডেল মেঘনা আলমকে রাজধানীর বসুন্ধরার বাসা থেকে আটক করে হেফাজতে নেয় ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আদেশ অনুযায়ী, পরদিন ১০ এপ্রিল রাতে আদালত তাকে বিশেষ ক্ষমতা আইনে ৩০ দিন আটক রাখার আদেশ দেন। সুনির্দিষ্ট কারণ না জানিয়ে মেঘনা আলমের এ আটকের ঘটনা ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনার জন্ম দেয়।

সূত্র: আরটিভি নিউজ
এনএন/ ১৭ এপ্রিল ২০২৫

 


Back to top button

দয়া করে ওয়েবসাইটে বিজ্ঞাপনের অনুমতি দিন

দেখে মনে হচ্ছে আপনি কোনও বিজ্ঞাপন ব্লকার ব্যবহার করছেন। আমরা বিজ্ঞাপনের উপর ভরসা করি ওয়েবসাইটের ফান্ডের জন্য