পশ্চিমবঙ্গ

সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে শিক্ষকেরা সাময়িক স্বস্তি পেলেও শিক্ষাকর্মীরা হতাশ

কলকাতা, ১৭ এপ্রিল – ২৬ হাজার চাকরি বাতিল মামলায় মধ্যশিক্ষা পর্ষদের আর্জিতে সাড়া দিয়ে সুপ্রিম কোর্ট বৃহস্পতিবার জানিয়েছে, যাঁরা ‘চিহ্নিত অযোগ্য’ (দাগি) নন, তেমন শিক্ষক-শিক্ষিকারা আপাতত স্কুলে যেতে পারবেন। তবে ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে রাজ্য সরকারকে পরীক্ষা নিয়ে নতুন নিয়োগপ্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হবে। শুধু শিক্ষকদের ক্ষেত্রেই এই নির্দেশ কার্যকর হবে। শিক্ষাকর্মীদের চাকরি বাতিলই থাকছে, জানিয়েছে আদালত। অর্থাৎ, শীর্ষ আদালতের নির্দেশে চাকরিহারাদের একাংশ সাময়িক ‘স্বস্তি’ পেলেও গ্রুপ সি এবং গ্রুপ ডি কর্মীদের ক্ষেত্রে তা প্রযোজ্য হচ্ছে না। কেন এমন নির্দেশ দেওয়া হল, রায়ে তা ব্যাখ্যা করেছে আদালত।

পর্ষদের আবেদনের পর শিক্ষকদের ক্ষেত্রে কেন ‘হ্যাঁ’ এবং শিক্ষাকর্মীদের ক্ষেত্রে কেন ‘না’ বলা হল, তার দু’টি কারণ দেখিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট।

প্রথমত, এসএসসির যে চাকরিপ্রার্থীদের ‘অযোগ্য’ হিসাবে চিহ্নিত করা গিয়েছে, সেই ‘দাগি’দের সংখ্যা গ্রুপ সি এবং গ্রুপ ডি শিক্ষাকর্মীদের মধ্যে তুলনামূলক বেশি।

দ্বিতীয়ত, আদালত মূলত মানবিক কারণে ‘দাগি’ নন, এমন শিক্ষকদের আপাতত স্কুলে যাওয়ার অনুমতি দিয়েছে। রাজ্যের স্কুলগুলিতে পাঠরত ছাত্রছাত্রীদের কথা ভেবে এই সিদ্ধান্ত সুপ্রিম কোর্টের। শিক্ষকদের অভাবে তারা যাতে পঠনপাঠন বঞ্চিত না হয়-হয়, আদালত তা নিশ্চিত করতে চেয়েছে। শিক্ষাকর্মীরা স্কুলে না-গেলে স্কুলের অন্যান্য কাজ চালাতে সমস্যা হতে পারে, কিন্তু পড়াশোনা তাতে আটকে থাকবে না। মূলত সে কথা ভেবেই আপাতত শিক্ষকদের জন্য পর্ষদের আবেদনে সাড়া দিয়েছে আদালত। শিক্ষাকর্মীরা সেই স্বস্তি পাননি।

আদালত জানিয়েছে, আগামী ৩১ মে-র মধ্যে নতুন নিয়োগপ্রক্রিয়া শুরু করতে হবে রাজ্য সরকারকে। সেই মর্মে ওই দিনের মধ্যেই আদালতে হলফনামা জমা দিতে হবে। যদি তা না-দেওয়া হয়, তবে নির্দেশ প্রত্যাহার করে নেবে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খন্নার ডিভিশন বেঞ্চ। সে ক্ষেত্রে আবার প্রয়োজনীয় নির্দেশ দেওয়া হবে। যদিও রাজ্যের তরফে জানানো হয়েছে, আদালতের সময়সীমা মেনেই কাজ করা হবে।

রায়ে সুপ্রিম কোর্ট আরও জানিয়েছে, চলতি বছরের মধ্যে নিয়োগপ্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হবে। নতুন করে যে পরীক্ষা নেওয়া হবে, তাতে ‘অযোগ্য হিসাবে চিহ্নিত’ নন, এমন শিক্ষকেরা কোনও বাড়তি সুবিধা পাবেন না।

সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে শিক্ষককেরা সাময়িক স্বস্তি পেলেও শিক্ষাকর্মীরা হতাশ। তাঁদের বক্তব্য, আদালত শিক্ষক এবং শিক্ষাকর্মীদের সমান অধিকার স্বীকার করল না। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, আদালতের এই রায় ‘বড় স্বস্তি’। তবে শিক্ষাকর্মীদের বিষয়টি নিয়ে রাজ্য কোন পথে এগোবে, তা আইনজীবীদের পরামর্শ নিয়ে ঠিক করা হবে। সরকারের প্রতি ভরসা রাখতে বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী।

সূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা
এনএন/ ১৭ এপ্রিল ২০২৫


Back to top button

দয়া করে ওয়েবসাইটে বিজ্ঞাপনের অনুমতি দিন

দেখে মনে হচ্ছে আপনি কোনও বিজ্ঞাপন ব্লকার ব্যবহার করছেন। আমরা বিজ্ঞাপনের উপর ভরসা করি ওয়েবসাইটের ফান্ডের জন্য