পরিবারের অমতে বিয়ে করলে, মিলবে না পুলিশি সুরক্ষা, বিতর্কিত রায় এলাহাবাদ হাইকোর্টের
নয়াদিল্লি, ১৮ এপিল – পরিবারের অমতে বিয়ের পর জীবন ও স্বাধীনতার ওপর হুমকি না এলে কোনো দম্পতি নাগরিক অধিকার হিসেবে পুলিশের কাছে নিরাপত্তা দাবি করতে পারবে না। নিরাপত্তা চেয়ে এমন এক দম্পতির করা রিট আবেদন শুনানি শেষে এলাহাবাদ হাইকোর্ট এই পর্যবেক্ষণ দিয়েছেন।
শ্রেয়া কেসরওয়ানি নামে এক নারী তাঁর ও স্বামীর নিরাপত্তা চেয়ে আবেদনটি করেন। তাতে পুলিশি নিরাপত্তার পাশাপাশি তাঁদের শান্তিপূর্ণ দাম্পত্য জীবনে পরিবারের অন্যদের হস্তক্ষেপ না করা নির্দেশনা চাওয়া হয়। শুনানি শেষে বিচারপতি সৌরভ শ্রীবাস্তব রিট আবেদনটি খারিজ করে দেন।
রায়ের পর্যবেক্ষণে বিচারক বলেন, পরিবারের বিরুদ্ধে বিয়ের পর জীবন ও স্বাধীনতার ওপর কোনো হুমকি না এলে পুলিশের সাহায্য দাবি করা উচিত নয়। এ ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট দম্পতির পারস্পরিক সহায়তায় নির্ভর করে সমাজের মুখোমুখি হওয়া উচিত। হুমকির পক্ষে উপযুক্ত প্রমাণ পাওয়া গেলে সে ক্ষেত্রে নিরাপত্তা দেওয়া যেতে পারে। কিন্তু কোনো হুমকির আশঙ্কা না থাকলে এমন আবেদন না করাই উত্তম।
শ্রেয়া ও তাঁর স্বামীর আবেদনে উল্লিখিত অভিযোগ পর্যালোচনা করে আদালত বলেছেন, আবেদনকারীদের প্রতি কোনো গুরুতর হুমকির আশঙ্কা নেই।
রিট আবেদন নিষ্পত্তি করতে গিয়ে আদালত বলেন, ‘এই দম্পতিকে পুলিশি নিরাপত্তার জন্য কোনো আদেশে প্রয়োজন নেই। কেবল নিজেদের ইচ্ছায় পালিয়ে বিয়ে করেছে—এমন তরুণ-তরুণীদের সুরক্ষা দেওয়া আদালতের উদ্দেশ্য নয়।’
আদালত আরও বলেন, ‘আবেদনকারীদের জীবন ও স্বাধীনতা বিপদের মুখে রয়েছে—এমন সিদ্ধান্তে পৌঁছানোর মতো কোনো তথ্য বা কারণ নেই। আবেদনকারীদের আত্মীয়দের কাছ থেকে শারীরিক বা মানসিক নির্যাতনের আশঙ্কা রয়েছে—এমন কোনো প্রমাণ বা সামান্যতম ইঙ্গিতও মেলেনি।’
তা ছাড়া আবেদনকারীরা তাঁদের আত্মীয়দের থেকে কোনো হয়রানির শিকার হয়েছেন—এমন কোনো নির্দিষ্ট অভিযোগ বা তথ্য দিয়ে সংশ্লিষ্ট থানাতেও কোনো মামলার করেননি। শুধু চিত্রকুট জেলার পুলিশ সুপারের (এসপি) কাছে একটি আবেদন জমা দিয়েছেন।
এ প্রসঙ্গে আদালত বলেন, ‘যদি সংশ্লিষ্ট পুলিশ বাস্তবে কোনো হুমকির আশঙ্কা শনাক্ত করে, তারা আইন অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে। এই প্রেক্ষাপটে, আদালত জোর দিয়ে বলেন, যদি কোনো ব্যক্তি তাঁদের সঙ্গে অসদাচরণ বা শারীরিক নির্যাতন করে, তবে আদালত ও পুলিশ কর্তৃপক্ষ তাঁদের সাহায্য করতে প্রস্তুত থাকবে।’
আদালত বলেন, তবে কোনো প্রমাণ ছাড়াই এ ধরনের আবেদনকারীরা সাধারণ বা স্বাভাবিক অধিকার হিসেবে নিরাপত্তার দাবি করতে পারেন না।
সূত্র: আজকের পত্রিকা
আইএ/ ১৮ এপিল ২০২৫