ঘুষ বাণিজ্যসহ বিভিন্ন অভিযোগে ঠাকুরগাঁওয়ের ওসিকে স্ট্যান্ড রিলিজ
ঠাকুরগাঁও, ১৯ এপ্রিল – মামলার আসামিকে ধরে এনে মোটা অংকের টাকা নিয়ে ছেড়ে দেওয়া, ঘুষ না দিলে বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষকে তুলে এনে মামলায় ফাঁসানোসহ নানা অভিযোগ উঠা ঠাকুরগাঁও সদর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শহিদুর রহমানকে স্ট্যান্ড রিলিজ করা হয়েছে। সদর থানায় যোগদানের ৫ মাসের মাথায় স্ট্যান্ড রিলিজ হলেন তিনি।
শনিবার (১৯ এপ্রিল) রাতে ওসিকে স্ট্যান্ড রিলিজের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ঠাকুরগাঁওয়ের পুলিশ সুপার শেখ জাহিদুল ইসলাম। গত শুক্রবার (১৮ এপ্রিল) রংপুর ডিআইজি আমিনুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে ঠাকুরগাঁও সদর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শহিদুর রহমানকে প্রশাসনিক কারণে আরআরএফ রংপুরে বদলি করা হয়। এমন খবর ছড়িয়ে পরার পর সদরের আকচা, গড়েয়া ও সালন্দরসহ বেশ কয়েকটি স্থানে মিষ্টি বিতরণের খবর পাওয়া গেছে।
ওসির বদলির বিষয়ে স্থানীয়রা অভিযোগ করে জানান, মাত্র ৫ মাস যোগদানের মধ্যে শহিদুর রহমান সাধারণ মানুষকে নানাভাবে হয়রানি করেছেন। রাজনৈতিক মামলায় অজ্ঞাতনামা থাকায় যে কাউকে ধরে নিয়ে এসে মোটা অংকের টাকা নিয়ে ছেড়ে দিতেন। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে দেখা গেছে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের ধরে ছেড়ে দেয়। তার সাথে আওয়ামী লীগ নেতাদের যোগসাজোস ছিল। শুধু তাই নয়, কলেজপড়ুয়া ছাত্রীর পারিবারিক বিষয়ে সমাধান টানতে গিয়ে নগদ অর্থ হাতিয়ে নিয়ে সমাধান দেয়নি ওসি। কারণ হিসেবে জানা গেছে, অপরপক্ষের কাছে টাকার পরিমাণ বেশি নিয়ে তাদের পক্ষে কাজ করেছেন। এ নিয়ে থানায় দ্বন্দ্বও হয়। যা ঘুষ নেওয়ার বিষয়টি ভিডিও ধারণ করলে স্পস্টভাবে উঠে আসে।
এছাড়াও সম্প্রতি, জেলা শহরের সরকারপাড়ার বাসিন্দা কয়েকজনের ১৬টি গরু ধরে নিয়ে থানায় আটকে রাখে ওসি শহিদুর। পরবর্তীতে তিন লাখ টাকা ঘুষ দাবি করলে টাকা না পাওয়ায় আটকে রাখা ১৬টি গরুর মধ্যে ৩টি গরু মারা যায়।
এ নিয়ে শহরে তোলপাড় সৃষ্টি হয়। গড়ায় মামলা পর্যন্ত। এই ওসি একজন দুর্নীতিবাজ, ঘুষখোর হিসেবে সবার মুখে মুখে পরিচিতি লাভ করলেও কমেনি তার ঘুষ বাণিজ্য। এমন একের পর এক ঘুষ বাণিজ্য ও দুর্নীতি নিয়ে ওসির বিরুদ্ধে ফলাও নিয়মিত করে খবর প্রকাশ করেন সংবাদকর্মীরা।
এ বিষয়ে ঠাকুরগাঁওয়ের পুলিশ সুপার শেখ জাহিদুল ইসলাম জানান, ওসিকে রংপুর ডিআইজি আমিনুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে স্ট্যান্ড রিলিজ করা হয়েছে। সেই চিঠি পাওয়ার পর ওসি তদন্তকে সদর থানার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
সূত্র: ঢাকা পোস্ট
এনএন/ ১৯ এপ্রিল ২০২৫