জাতীয়

স্বায়ত্তশাসনের দাবিতে পরমাণু শক্তি কমিশনের সংবাদ সম্মেলন

ঢাকা, ২২ এপ্রিল – বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশনের স্বায়ত্তশাসন পুনঃপ্রতিষ্ঠা এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের হস্তক্ষেপ বন্ধের দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।

মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) আগারগাঁওয়ের বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশনে পরমাণু বিজ্ঞানী সংঘ কর্তৃক আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানানো হয়।

লিখিত বক্তব্যে বাংলাদেশ পরমাণু বিজ্ঞানী সংঘের বর্তমান সভাপতি ড. এএমএস সাইফুল্লাহ বলেন, পরমাণু শক্তি কমিশন একটি স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান। আন্তর্জাতিক পরমাণু সংস্থা আইইএ’র রীতিনীতি অনুসরণ করে কমিশন।কমিশনের আওতাধীন ৪০টি ইনস্টিটিউটের মাধ্যমে দেশে পরমাণু বিজ্ঞান সংশ্লিষ্ট বিশেষায়িত গবেষণা, শিক্ষা, চিকিৎসা ও সেবামূলক কর্মকাণ্ড পরিচালিত হচ্ছে। কমিশনের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে প্রতি বছর আট লক্ষাধিক ব্যক্তি ও শতাধিক প্রতিষ্ঠান বিভিন্ন ধরনের সেবা নিয়ে থাকে। এর মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ রাজস্ব আয় হয়।

তিনি আরও বলেন, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ে অভিজ্ঞতাসম্পন্ন একজন চেয়ারম্যান ও চারজন সদস্যের সমন্বয়ে কমিশন গঠিত হওয়ার কথা থাকলেও দীর্ঘদিন ধরে শীর্ষ পদগুলো শূন্য। এর জেরে কমিশনের সার্বিক কার্যক্রমে স্থবিরতা বিরাজ করছে। পাশাপাশি মন্ত্রণালয়ের অযাচিত হস্তক্ষেপ ও কর্তৃত্ববাদী আচরণের কারণে কমিশনের বিজ্ঞানী, কর্মকর্তা এবং কর্মচারীরা সুবিধাদি থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।

পরমাণু শক্তি কমিশনের বিজ্ঞানীদের উচ্চশিক্ষা ও প্রশিক্ষণে বাধা দেওয়া হচ্ছে জানিয়ে ড. এএমএস সাইফুল্লাহ বলেন, বর্তমানে প্রায় ৬০০ বিজ্ঞানীসহ আড়াই হাজার কর্মকর্তা-কর্মচারী কর্মরত রয়েছে। বিশেষায়িত এ প্রতিষ্ঠানের চাকরি বিধিমালা ভিন্ন। বিধিমালায় এ প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞানীদের বিদেশে উচ্চশিক্ষা গ্রহণকে উৎসাহিত করা হয়েছে। ২০১১ সাল পর্যন্ত বিজ্ঞানীদের উচ্চ শিক্ষা ও প্রশিক্ষণের পূর্বানুমতি, মনোনয়ন এবং বিদেশ গমনের জিও কমিশন থেকেই দেওয়া হতো।

২০১১ সালে তৎকালীন সরকার কমিশনের জিও প্রদানের ক্ষমতা রহিত করে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের ওপর ন্যস্ত করে। এরপর থেকে বিজ্ঞানীরা উচ্চ শিক্ষা ও প্রশিক্ষণের ক্ষেত্রে বিভিন্নভাবে বঞ্চিত হয়ে আসছে। দীর্ঘ ১৬ বছর পর ফ্যাসিস্ট সরকার বিতাড়িত হলেও এখনও মন্ত্রণালয়ে ঘাপটি মেরে থাকা ফ্যাসিস্টদের দোসর আমলারা অন্যায়ভাবে পূর্ণ স্কলারশিপ থাকা সত্ত্বেও বিজ্ঞানীদের বিদেশে উচ্চ শিক্ষা ও প্রশিক্ষণের জিও দিচ্ছে না। আমলাতান্ত্রিক জটিলতা তৈরি করে কমিশনের নবীন বিজ্ঞানীদের বঞ্চিত করছে।

পরমাণু শক্তি কমিশনে বেতন বৈষম্য ও পদ অবনমন হচ্ছে জানিয়ে তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশন চাকরি বিধিমালা ১৯৮৫ এর ১৮(২) অনুযায়ী, কমিশনের বিজ্ঞানীদের পদসমূহ পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের অনুরূপ। শিক্ষকদের মতো বেতনভাতা ও সুযোগ পাবে তারা। ২০১৫ সাল পর্যন্ত বিজ্ঞানীরা সেভাবেই বেতনভাতা পেয়ে আসছিল। গত সরকারের আমলে সিলেকশন গ্রেড প্রথা বাতিল হওয়ার পর শিক্ষা মন্ত্রণালয় বিশেষ প্রজ্ঞাপন জারি করে বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপকদের গ্রেড-১ প্রাপ্তি নিশ্চিত করে। কিন্তু কমিশনের বিজ্ঞানীরা গ্রেড-১ প্রাপ্তি থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।

সূত্র: ঢাকা পোস্ট
এনএন/ ২২ এপ্রিল ২০২৫


Back to top button