জর্ডানে মুসলিম ব্রাদারহুড নিষিদ্ধ, সম্পত্তি বাজেয়াপ্তের নির্দেশ
আম্মান, ২৫ এপ্রিল – মুসলিম ব্রাদারহুড নিষিদ্ধ করেছে জর্ডান। জর্ডানের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ইসলামপন্থি বিরোধী দলটি “নাশকতার ষড়যন্ত্রে” জড়িত ছিল। জাতীয় নিরাপত্তা হুমকিতে ফেলার অভিযোগও করা হয়েছে গোষ্ঠীটির বিরুদ্ধে।
জর্ডানে এই দলটি কয়েক দশক ধরে কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। অন্য অনেক আরব দেশে এটি আগে থেকেই নিষিদ্ধ।
জর্ডানের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় গত বুধবার দেশটির সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিরোধী গোষ্ঠী মুসলিম ব্রাদারহুডকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে। একইসঙ্গে তাদের অফিসও বন্ধ করে দেওয়া হয় এবং সম্পদ বাজেয়াপ্ত করা হয়।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মাজেন আল-ফারায়া বলেছেন, এই সিদ্ধান্তটি একটি নাশকতার ষড়যন্ত্রের প্রতিক্রিয়া হিসাবে নেওয়া হয়েছে এবং তা অবিলম্বে কার্যকর হবে। এই ষড়যন্ত্রে দলটির একজন নেতার ছেলে জড়িত ছিল বলেও জানিয়েছেন তিনি।
ফারায়া জানিয়েছেন, “তথাকথিত মুসলিম ব্রাদারহুডের সকল কার্যকলাপ নিষিদ্ধ করার এবং যেকোনো কর্মকাণ্ড আইনের বিধান লঙ্ঘন বলে বিবেচনা করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে”। তিনি আরও বলেন, এই গোষ্ঠীর মতাদর্শের যে কোনও প্রচারকারীকেও আইনের আওতায় আনা হবে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “প্রমাণিত হয়েছে যে এই গোষ্ঠীর সদস্যরা অন্ধকারে (গোপনে) কাজ করে এবং দেশকে অস্থিতিশীল করতে পারে এমন কার্যকলাপে লিপ্ত হয়।”
জানানো হয়েছে, “বিলুপ্ত মুসলিম ব্রাদারহুডের সদস্যরা নিরাপত্তা ও জাতীয় ঐক্যে হস্তক্ষেপ করেছে এবং নিরাপত্তা ও জনশৃঙ্খলা ব্যাহত করেছে।”
গোষ্ঠীটির প্রকাশিত যে-কোনও কিছুর ওপর এই নিষেধাজ্ঞা প্রযোজ্য হবে বলেও জানিয়েছে জর্ডান সরকার। এই ঘোষণার পরপরই পুলিশ রাজধানী আম্মানে দলটির সদর দপ্তর ঘিরে ফেলে এবং তল্লাশি চালায়।
মুসলিম ব্রাদারহুড কী?
মুসলিম ব্রাদারহুড অনেক আরব দেশে নিষিদ্ধ হলেও জর্ডানে সংগঠনটি কয়েক দশক ধরেই আইনতসঙ্গতভাবেই কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। গোষ্ঠীটি সুন্নি ইসলামপন্থি মতাদর্শ এবং শরিয়া আইনের অধীনে খেলাফত প্রতিষ্ঠার ঘোষিত লক্ষ্য নিয়ে প্রচারণা চালিয়ে জর্ডানের প্রধান শহরগুলোতে তৃণমূল সমর্থন পেয়েছে।
২০২৪ সালের সেপ্টেম্বরে পার্লামেন্ট নির্বাচনে জর্ডানের ব্রাদারহুডের রাজনৈতিক শাখা ইসলামিক অ্যাকশন ফ্রন্ট – আইএএফ উল্লেখযোগ্য সাফল্য অর্জন করেছে। হামাসের বিরুদ্ধে ইসরায়েলের যুদ্ধে মানুষের ক্ষোভ কাজে লাগিয়ে ১৩৮টি আসনের মধ্যে ৩১টি আসন জিতে নিয়েছে আইএএফ। নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি ছিল ৩২ শতাংশ।
ভোটর ফল প্রকাশের পর আইএএফ নেতা ওয়ায়েল আল-সাক্কা বলেছিলেন, “জর্ডানের জনগণ আমাদের ভোট দিয়ে আমাদের ওপর আস্থা রেখেছে।”
সূত্র: ঢাকা পোস্ট
এনএন/ ২৫ এপ্রিল ২০২৫