ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনা, যে বার্তা দিলেন এরদোগান
আঙ্কারা, ২৯ এপ্রিল – কাশ্মিরের পেহেলগামে বন্দুকধারীদের হামলায় ২৬ জনের মৃত্যুর ঘটনায় ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে চরম উত্তেজনা চলছে। ইতোমধ্যে দুই দেশের সেনাদের মধ্যে সীমান্তে পাঁচবার গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে। দিল্লি-ইসলামাবাদের মধ্যে সামরিক সংঘাতের আশঙ্কার মধ্যে বিভিন্ন দেশের নেতারা মধ্যস্থতার প্রস্তাব ও সংলাপের আহ্বান জানিয়েছে। এবার এ ইস্যুতে মুখ খুলেছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোয়ান।
সোমবার (২৮ এপ্রিল) তুরস্কের মন্ত্রিসভার বৈঠকের পর সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, আরও ভয়াবহ পরিস্থিতি রূপ নেওয়ার আগেই তুরস্ক শিগগিরই পাকিস্তান এবং ভারতের মধ্যে উত্তেজনার অবসান চায়।
এদিকে, ভারত পাকিস্তানে হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে সংবাদ প্রকাশ করেছে প্রভাবশালী মার্কিন সংবাদমাধ্যম নিউইয়র্ক টাইমস। সংবাদমাধ্যমটি জানায়, ইতোমধ্যে বিশ্বের এক ডজনেরও বেশি দেশের নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন মোদি। একইসঙ্গে দিল্লিতে অবস্থিত অন্তত ১০০ কূটনৈতিক মিশনের কর্মকর্তাদের সঙ্গেও নিয়মিত আলোচনা চালানো হচ্ছে।
এর আগে, গত ২২ এপ্রিল পেহেলগামে হামলার পর পাকিস্তানকে দায়ী করে একাধিক পদক্ষেপ নিয়েছে ভারত। আটারি সীমান্ত বন্ধ করে দিয়ে পাকিস্তানিদের ফিরে যেতে বলা হয়েছে। সব ধরনের ভিসা বাতিল হয়েছে। সিন্ধু নদের পানিবণ্টন চুক্তি স্থগিত করেছে ভারত।
পাল্টা ব্যবস্থা হিসাবে একই ধরনের পদক্ষেপ দিয়েছে পাকিস্তানও। সিন্ধু নদের পানিবণ্টন চুক্তি স্থগিতে ভারতের সিদ্ধান্তের প্রতিক্রিয়ায় পাকিস্তান সিমলা চুক্তি স্থগিতের ঘোষণা দিয়েছে। এ ছাড়া পাকিস্তানের আকাশসীমা নিষিদ্ধ, সব ধরনের বাণিজ্য বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে ইসলামাবাদ।
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফ জানান, সিন্ধু পানি বণ্টন চুক্তি স্থগিতের পদক্ষেপকে ‘যুদ্ধের ঘোষণা’ হিসেবে দেখছে পাকিস্তান। তিনি বলেছেন, যেকোনো মূল্যে নিজের পানির অধিকার রক্ষা করবে পাকিস্তান।
পাকিস্তানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী খাজা আসিফ হুঁশিয়ার করে বলেন, যদি পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়, আমাদের থামাতে কেউ পারবে না। মোদি যদি উত্তেজনা বাড়ানোর পথ বেছে নেন, তবে আমরা তাকে তার বাড়ি পর্যন্ত ধাওয়া করব। আমরা আমাদের বাহিনীকে আরও শক্তিশালী করেছি। কারণ, এখন সামরিক আক্রমণ আসন্ন।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেন, পেহেলগামে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলার পর থেকে প্রতিটি ভারতীয় নাগরিকের ‘রক্ত ফুটছে’। হামলায় জড়িত প্রত্যেককে কঠিনতম শাস্তির মুখোমুখি হতে হবে।
বিশ্লেষক এবং কূটনীতিকরা বলছেন, পাকিস্তান যে কাশ্মীরে হামলা চালিয়েছে, তার জোরালো প্রমাণ এখনও দেখাতে পারেনি ভারত। এ অবস্থায় দিল্লি কোনো পদক্ষেপ নিলে বিশ্ব মঞ্চে তার ন্যায্যতা পাওয়ার সম্ভাবনা কম। তবে, পারমাণবিক অস্ত্রে সজ্জিত ভারত এবং পাকিস্তানের মধ্যে চমলান সামরিক সংঘর্ষের আশঙ্কা যদি বাড়তে থাকে তাহলে তা নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন হতে পারে।
এদিকে, ইরান এবং সৌদি আরব উভয় পক্ষের সঙ্গে কথা বলেছেন। ইরান ও বাংলাদেশ প্রকাশ্যে মধ্যস্থতার প্রস্তাব দিয়েছে। জাতিসংঘ এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন সংযম এবং সংলাপের আহ্বান জানিয়েছে। কিন্তু ট্রাম্প প্রশাসনের কর্মকর্তারা সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ভারতের লড়াইয়ের প্রতি জোরালো সমর্থন জানিয়েছেন।
সূত্র: আরটিভি নিউজ
আইএ/ ২৯ এপ্রিল ২০২৫