জাতীয়

নতুন রূপে সাজানো হচ্ছে ডিএসসিসির ১৮টি ওয়ার্ড

ফারুক আলম

ঢাকা, ০৩ ফেব্রুয়ারি – ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে (ডিএসসিসি) ১৮টি ওয়ার্ড যুক্ত হয় প্রায় ৪ বছর ৬ মাস আগে। কিন্তু এখনও উন্নয়নের ছোঁয়া না লাগায় দিন দিন ক্ষোভ বাড়ছে স্থানীয়দের। ওয়ার্ডগুলোতে এখনও আঞ্চলিক কার্যালয়, কাউন্সিলর অফিস ও কমিউনিটি সেন্টার নির্মাণ হয়নি। অবকাঠামো উন্নয়ন থেকে বঞ্চিত এসব ওয়ার্ডের মানুষ। অবহেলায় পরে থাকা ওয়ার্ডগুলো নিয়ে নতুন পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে ডিএসসিসি।

ডিএসসিসি উন্নয়ন পরিকল্পনার অংশ হিসেবে ১৮টি ওয়ার্ডে ৪টি আঞ্চলিক কার্যালয় নির্মাণে ‘ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন আওতাধীন আঞ্চলিক কার্যালয় নির্মাণ’ নামে একটি প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। প্রকল্পটির আওতায় চারটি আঞ্চলিক কার্যালয় নির্মাণে ১ একর জমি নির্ধারণ করা হয়েছে। জমি অধিগ্রহণের বিষয়ে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় ও ডিএসসিসির মধ্যে আলোচনা চলছে। নতুন ওয়ার্ডগুলোতে আঞ্চলিক কার্যালয় ও কমিউনিটি সেন্টার নির্মাণে ভিন্নরূপে সাজিয়ে তুলবে বলে আশাবাদ সংশ্লিষ্টদের।

জানা গেছে, ১৮টি ওয়ার্ডে চারটি আঞ্চলিক কার্যালয় নির্মাণে জমি অধিগ্রহণ করা হবে। একটি ওয়ার্ডে ৬২ শতাংশ খাস জমি আছে, সেখানে আরও কিছু জমি অধিগ্রহণ করবে। আর বাকি তিন আঞ্চলিক কার্যালয়ের জন্য ১ একর করে জমি অধিগ্রহণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আঞ্চলিক কার্যালয়ের জমি অধিগ্রহণ করতে প্রায় ১শ ৩০ কোটি টাকার প্রয়োজন। আঞ্চলিক কার্যালয়ের ভবনগুলো হবে আধুনিকায়ন। প্রতিটি কার্যালয়ের সামনে থাকবে ফুলের বাগান, গাড়ি পাকিংয়ের ব্যবস্থা এবং সেবা নিতে আসা মানুষের জন্য বসার জায়গা রাখা হবে।

আরও পড়ুন : টুঙ্গিপাড়া যাওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন নরেন্দ্র মোদী

স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সিটি করপোরেশন শাখার সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে নতুন ওয়ার্ডগুলোতে আঞ্চলিক কার্যালয় নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। ভবন নির্মাণে জমি অধিগ্রহণের জন্য কোন কোন ওয়ার্ড বেছে নেওয়া হবে সেটি নিয়েও আলোচনা চলছে। আশা করা যাচ্ছে, কিছু দিনের মধ্যেই নতুন ওয়ার্ডগুলোর আঞ্চলিক কার্যালয়ের ভূমি অধিগ্রহণসহ ভবন নির্মাণের কাজ শুরু হবে।

১৯৯৩ সালে জারিকৃত আইন অনুযায়ী সরকার উন্নততর প্রশাসন এবং করপোরেশনের কার্যাবলী অধিকতর সুষ্ঠুভাবে সম্পাদনের জন্য সরকার শহরটিকে এমন সংখ্যক অঞ্চলে বিভক্ত করতে পারবেন যেমনটির প্রয়োজন সরকার যথোপযুক্ত বলে বিবেচনা করবেন। প্রতিটি অঞ্চলের জন্য একটি করে আঞ্চলিক কার্যালয় স্থাপন করা যাবে। আর এসব আঞ্চলিক কার্যালয় সিটি করপোরেশনের মেয়রের তত্ত্বাবধান ও নিয়ন্ত্রণে করপোরেশনের দেওয়া দায়িত্ব পালন করবে। বর্তমানে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন পুরনো ৫৭টি ওয়ার্ডে পাঁচটি আঞ্চলিক কার্যালয় আছে। নতুন যুক্ত হওয়া ১৮টি ওয়ার্ডে ৪টি আঞ্চলিক কার্যালয় নির্মাণ হলে মোট ৯টি আঞ্চলিক কার্যালয় হবে ডিএসসিসির।

ডিএসসিসির সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, নতুন ১৮টি ওয়ার্ড ৮টি ইউনিয়নে থাকাবস্থায় সেখানে খাস জমি রয়েছে কিনা তা জানতে সিটি করপোরেশন প্রত্যেক কাউন্সিলরকে অবহিত করা হয়। সাবেক ৮টি ইউনিয়নের মধ্যে ডেমরা ইউনিয়নে পরিষদে ৬২ শতাংশ, শ্যামপুর ইউনিয়ন পরিষদে ৭ কাঠা এবং মাতুয়াইল ইউনিয়ন পরিষদে ৫ শতাংশ জমির পরিমাণ উল্লেখ রয়েছে। ইউনিয়ন পরিষদের এসব জমি নিয়েও কিছুটা জটিলতা আছে। জমির জটিলতা এবং আরও কিছু জমি অধিগ্রহণের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে জমি অধিগ্রহণের জন্য স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় ও ডিএসসিসির মধ্যে আলোচনা চলছে।

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক শর্তে বলেন, ডিএসসিসির নতুন ১৮টি ওয়ার্ড মিলে ৪টি আঞ্চলিক কার্যালয় বানানোর পরিকল্পনা রয়েছে। ১৮টি ওয়ার্ডের মধ্যে কোন কোন ওয়ার্ডে চারটি আঞ্চলিক কার্যালয় নির্মাণ করা হবে সেটি এখনও নির্ধারণ হয়নি। ওয়ার্ডের বাসিন্দাদের কথা চিন্তা করে পরিকল্পিতভাবে জমি অধিগ্রহণ করা হবে। জমি অধিগ্রহণ শেষে কোনও ধরনের বিতর্কের সৃষ্টি না হয় সেদিকেও লক্ষ্য রাখা হচ্ছে।

ডিএসসিসির নতুন ৬৫ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মো. সামসুদ্দিন ভূঁইয়া বলেন, নতুন ওয়ার্ডগুলোর জন্য আঞ্চলিক কার্যালয় নির্মাণ করা জরুরি হয়ে পড়ছে। যত দ্রুত সম্ভব কার্যালয় নির্মাণ করতে হবে। ইতোমধ্যে সিটি করপোরেশন থেকে আমাদের (কাউন্সিল) কাছে খাস জমির পরিমাণ জানতে চেয়েছিল। অধিকাংশ ওয়ার্ডে সরকারের খাস জমি থাকলেও সেগুলো বেদখল হয়ে গেছে। কিছু খাস জমিতে ভবন নির্মাণ ও মামলা চলছে।

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (অতিরিক্ত সচিব) এ বি এম আমিন উল্লাহ নুরী বলেন, ডিএসসিসির অন্তর্ভুক্ত নতুন ১৮টি ওয়ার্ডে আঞ্চলিক কার্যালয় নির্মাণে জমি অধিগ্রহণের আলোচনা চলছে। পুরনো ওয়ার্ডগুলোতেও নতুন করে ৩টি আঞ্চলিক কার্যালয় নির্মাণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সিটি করপোরেশন। আঞ্চলিক কার্যালয় নির্মাণে ওই সব এলাকার মানুষের ভোগান্তি কমবে।

সূত্র: আরটিভি
এন এ/ ০৩ ফেব্রুয়ারি

Back to top button