আইন-আদালত

ওকালতনামায় ডেপুটি জেলারের পূর্ণাঙ্গ নামসহ সই থাকতে হবে : হাইকোর্ট

ঢাকা, ১৯ অক্টোবর- নিবন্ধনসহ যাচাই করে আসামির ওকালতনামায় ডেপুটি জেলারদের পূর্ণাঙ্গ নামসহ সই থাকতে হবে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।

ওকালতনামায় ডেপুটি জেলারের সই ছাড়া আসামি জামিনে বের হয়ে যাওয়ার ঘটনা নজরে আসার পর সোমবার (১৯ অক্টোবর) এমন আদেশ দিয়েছেন বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি আহমেদ সোহেলের ভার্চ্যুয়াল হাইকোর্ট বেঞ্চ।

একইসঙ্গে জামিন পেয়ে বের হওয়ায় আসামিকে চার সপ্তাহের মধ্যে আবার বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণ করার নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। পাশাপাশি আসামির আইনজীবী ও ডেপুটি জেলারকে ভবিষ্যতে এমন কাজ না করতে সতর্ক করা হয়েছে।

দুদকের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মো. খুরশীদ আলম খান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন (মানিক) ও সহকারী অ্যাটর্নি মাহজাবিন রাব্বানী দীপা।

ডেপুটি জেলারের পক্ষে আইনজীবী ছিলেন মোহাম্মদ আলী আজম। আসামি পক্ষে আইনজীবী ছিলেন মো. রুহুল কুদ্দুস কাজল ও শামীমা আক্তার।

আরও পড়ুন: দুই মামলায় জামিন পেলেন রাশেদ চিশতি

পরে আমিন উদ্দিন মানিক জানান, করোনা পরিস্থিতিতে দেশের সব আদালত ভার্চ্যুয়াল পদ্ধতিতে চলছিল, তখন প্রত্যেকটি মামলা ই-মেইলের মাধ্যমে সব নথিসহ পাঠাতে হতো। সেই সময়ে একটি ব্যাংকের জাল দলিল তৈরি, অতিমূল্যায়ন দেখিয়ে প্রায় ১১ কোটি টাকা ঋণ জালিয়াতির দুই মামলায় জিওলোজাইজ সার্ভে করপোরেশনের প্রোপাইটর মো. মিজানুর রহমান কনক গত ১৫ জুন জামিন পান। তখন শর্ত দেওয়া হয় নিয়মিত আদালত খোলার এক সপ্তাহের মধ্যে জামিন রেগুলার করে নিতে হবে। যখন আংশিক শারীরিক আদালত চালু হলো ও এফিডেভিট করা চালু হলো তখন এফিডেভিট সেকশন দেখতে পেলো আসামির দু’টি মামলার একটিতে ওকালতনামায় ডেপুটি জেলারের সই নেই। এরপর আসামিপক্ষের আইনজীবী শামীমা আক্তার বিষয়টি আদালতের নজরে আনেন। পরে আইনজীবী আদালতে ওকালতনামা সই নিয়ে এফিডেভিটের জন্য নিয়ে এলে আদালত দেখতে পান, আসামি জামিনে বাইরে থাকা অবস্থায় জেলের ভেতরে আছেন বলে ডেপুটি জেলার স্বাক্ষর করেন এবং তারিখও জেলে থাকার সময়ের দেন।

তখন গত ৫ অক্টোবর আদালত এক আদেশে সংশ্লিষ্ট ডেপুটি জেলারকে ১১ অক্টোবর আদালতে উপস্থিত হয়ে এর কারণ ব্যাখ্যা করতে নির্দেশ দেন। ১১ অক্টোবর ডেপুটি জেলার খোন্দকার মো. আল মামুন আইনজীবীর মাধ্যমে হাজির হয়ে ব্যাখ্যা দিতে সময় প্রার্থনা করেন। এরপর রোববার ডেপুটি জেলার নিজের ভুল স্বীকার করে নিঃর্শত ক্ষমা প্রার্থনা করেন এবং বলেন, প্রতিদিন তিন থেকে সাড়ে তিনশ’ ওকালতনামায় স্বাক্ষর করেন, এ কারণে অনিচ্ছাকৃত ভুল হয়ে গেছে, যোগ করেন তিনি।

আমিন উদ্দিন মানিক আরও জানান, সোমবার আদেশে আদালত দেশের সব জেল সুপারকে আসামির ওকালতনামায় স্বাক্ষরের জন্য আসামি ভেতরে নাকি বাইরে আছে, তা ভেরিফাই করে ওকালতনামায় স্বাক্ষর ও রেজিস্ট্রিভুক্ত করার নির্দেশ এবং ওকালতনামায় সংশ্লিষ্ট ডেপুটি জেলারের পূর্ণ নামসহ স্বাক্ষর করতে হবে। এ বিষয়ে আদেশটি কার্যকরী করার জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব, পুলিশের আইজিপি, আইজি প্রিজন ও সব আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।

সূত্র : বাংলানিউজ
এন এইচ, ১৯ অক্টোবর

Back to top button