জাতীয়

৪৬তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষা পেছানোর দাবিতে পরীক্ষার্থীদের অবস্থান

ঢাকা, ০৮ এপিল – ৪৬তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষা পেছানোর দাবিতে সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি) কার্যালয়ে অবস্থান নিয়েছেন পরীক্ষার্থীরা। তারা দাবি জানাচ্ছেন, ৮ মে থেকে নয় এ পরীক্ষা জুন মাসে নিতে হবে।

মঙ্গলবার (৮ এপ্রিল) দুপুরে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে পিএসসি কার্যালয়ে ঢুকে পড়েন বিভিন্ন বিসিএসের পরীক্ষার্থীরা। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসে স্থানীয় থানা পুলিশ ও সেনাবাহিনীর টহল টিম। বিকেল ৩টার দিকে বিক্ষুব্ধ পরীক্ষার্থীদের মধ্য থেকে ৬ প্রতিনিধির সঙ্গে বৈঠকে বসেন পিএসসি চেয়ারম্যান ড. মোবাশ্বের মোনেম।

পরীক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, পিএসসি ঘোষণা করেছে আগামী ৮ মে ৪৬তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষা শুরু হবে। কিন্তু এ তারিখ থেকে লিখিত পরীক্ষা দিতে ইচ্ছুক নন পরীক্ষার্থীরা। কারণ, সরকারি কর্ম কমিশন থেকে জানানো হয়েছিল— পরীক্ষা সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য পিএসসির ফেসবুক পেজে জানানো হবে। ফেসবুক পেজে ৪৬তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষার সম্ভাব্য তারিখ জানানো হয়েছিল মে মাসের শেষ সপ্তাহে। সে অনুযায়ী আমরা প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম। এর মধ্যে ঈদের আগে আমাদের নোটিশ দিয়ে জানানো হয় লিখিত পরীক্ষা শুরু হবে ৮ মে। এটি আমাদের সঙ্গে এক ধরনের প্রহসন।

তারা বলেন, ইতোমধ্যে ৪০তম বিসিএসের ভাইভা পরীক্ষা চলছে। এছাড়া ৪৫তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষা নেওয়া হয়েছে অন্তত দেড় বছর আগে। সেটার ফলাফল এখনও হয়নি। এর মধ্যে ৪৬তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষার আয়োজনে তড়িঘড়ি করা হচ্ছে। এ পরীক্ষার একমাস পর আবার ৪৭তম বিসিএসের প্রিলিমিনারি পরীক্ষা।

এক পরীক্ষার্থী বলেন, এক মাসের নোটিশে ৯০০ নম্বরের পরীক্ষা দেওয়া কতখানি যুক্তিযুক্ত? যেখানে ৪৭তম বিসিএসের প্রিলিমিনারি পরীক্ষার দুই মাস আগে নোটিশ করা হয়েছে সেখানে ৯০০ নম্বরের পরীক্ষা দেওয়ার জন্য এক মাস আগে জানানো হলো।

পরীক্ষার্থীরা বলেন, ৮ মে থেকে আমরা পরীক্ষাায় অংশ নিতে চাই না। ওই পরীক্ষা পিছিয়ে জুন মাসে নিতে হবে। পাশাপাশি আগামী জুন মাসের আগেই ৪০তম বিসিএসের রেজাল্ট ক্লিয়ার করতে হবে। যেন একই প্রার্থী বারবার অন্য বিসিএসগুলোতে অংশ নিতে না পারে। কারণ, একজন প্রার্থী বিভিন্ন বিসিএস পরীক্ষায় অংশ নিয়ে ভিন্ন ভিন্ন ক্যাডারে সুযোগ পাচ্ছে, অন্য পরীক্ষার্থীরা বঞ্চিত হচ্ছে। এটা পরীক্ষার্থীদের সমস্যা নয় পিএসসির সমস্যা। এসব দাবিতে আমরা আজকে পিএসসিতে এসেছি। পিএসসি চেয়ারম্যানের সঙ্গে বৈঠকে বসেছেন আমাদের ৬ সদস্যের প্রতিনিধি দল। ওই বৈঠকে আশা করি সঠিক সিদ্ধান্ত জানাবে পিএসসি।

বিক্ষুব্ধ এক পরীক্ষার্থী বলেন, এর আগেও আমরা পিএসসি চেয়ারম্যানের কাছে গিয়েছি। আজ সকালে তিনি সংবাদ মাধ্যমে মিথ্যা তথ্য দিয়েছেন। এটার আমরা তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। পিএসসি চেয়ারম্যান বলেছেন— নিচে যারা অবস্থান নিয়ে আন্দোলন করছেন তারা বিসিএসের পরীক্ষার্থী নয় বা তারা দুর্বল পরীক্ষার্থী ও অযোগ্য। পিএসসির মতো জায়গায় সর্বোচ্চ পজিশনে থেকে এ ধরনের কথা কোনোভাবেই মানা যায় না। প্রিলিমিনারি ও লিখিত পরীক্ষার সিলেবাস নাকি এক। বিষয়টা হাস্যকর। এই কথা তিনি কীভাবে পিএসসি চেয়ারম্যান হয়ে বলতে পারেন। যদি তাই হয় তাহলে লিখিত নেওয়ার দরকার কী, প্রিলিমিনারি দিয়েই তো চাকরি দিয়ে দিতে পারেন। তার এ ধরনের বক্তব্য আমরা প্রত্যাখ্যান করছি এবং তাকে বক্তব্য প্রত্যাহার করে নিতে হবে।

পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও ৪৪তম বিসিএসের ভাইভা পরীক্ষার্থী মো. আবিদুল ইসলাম ঢাকা পোস্টকে বলেন, ২২ এপ্রিল ৪৪তম বিসিএসের ভাইভা। আবার ৮ মে ৪৬তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষা। জুনে আবার ৪৭তম বিসিএসের প্রিলিমিনারি পরীক্ষা। সেক্ষেত্রে আমি মাত্র দুই সপ্তাহের কম সময় পাচ্ছি। যা রীতিমতো জুলুম ও অন্যায়। অনেক পরীক্ষার্থী আছেন যাদের একই দিনে ভাইবা ও লিখিত পরীক্ষার তারিখ পড়েছে। পিএসসির এমন সিদ্ধান্ত মেধাবীদের সঙ্গে বঞ্চনার শামিল।

সূত্র: ঢাকা পোস্ট
আইএ/ ০৮ এপিল ২০২৫


Back to top button

দয়া করে ওয়েবসাইটে বিজ্ঞাপনের অনুমতি দিন

দেখে মনে হচ্ছে আপনি কোনও বিজ্ঞাপন ব্লকার ব্যবহার করছেন। আমরা বিজ্ঞাপনের উপর ভরসা করি ওয়েবসাইটের ফান্ডের জন্য