এশিয়া

“প্রোটেকশনিজম কোনও পথ দেখায় না” এবং বাণিজ্য যুদ্ধের “কোনও বিজয়ী নেই”

বেইজিং, ১৪ এপ্রিল – বাণিজ্য যুদ্ধে কোনও বিজয়ী নেই বলে মন্তব্য করেছেন চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। পাল্টাপাল্টি শুল্ক আরোপ নিয়ে সাম্প্রতিক সময়ে যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে চলমান উত্তেজনার মধ্যে এই মন্তব্য করলেন তিনি।

সোমবার (১৪ এপ্রিল) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা এএফপি ও এপি।

প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং সোমবার সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, “প্রোটেকশনিজম কোনও পথ দেখায় না” এবং বাণিজ্য যুদ্ধের “কোনও বিজয়ী নেই”। রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম জানিয়েছে, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোতে সফর শুরু উপলক্ষ্যে তিনি এসব মন্তব্য করেন। এই অঞ্চলের তিনটি দেশ সফরের অংশ হিসেবে প্রথমে তিনি ভিয়েতনাম সফরে যাচ্ছেন।

হ্যানয় থেকে এএফপি জানিয়েছে, চলতি বছরের প্রথম বিদেশ সফরে শি জিনপিং মালয়েশিয়া ও কম্বোডিয়াও সফর করবেন। চীন এ সফরের মাধ্যমে আঞ্চলিক বাণিজ্যিক সম্পর্ক জোরদার এবং মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আরোপিত বিপুল শুল্কের প্রভাব মোকাবিলার লক্ষ্য নিয়েছে।

চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, দক্ষিণ-পূর্ব এশীয় তিনটি দেশের নেতাদের সঙ্গে প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের এই সফর গোটা অঞ্চলের জন্য “গুরুত্বপূর্ণ”।

অন্যদিকে ভিয়েতনামের রাষ্ট্রীয় পত্রিকা ‘ন্যান দান’-এ সোমবার প্রকাশিত এক প্রবন্ধে শি জিনপিং দুই দেশকে বহুপক্ষীয় বাণিজ্যব্যবস্থা, বৈশ্বিক শিল্প ও সরবরাহ শৃঙ্খলের স্থিতিশীলতা এবং উন্মুক্ত ও সহযোগিতাপূর্ণ আন্তর্জাতিক পরিবেশ সুরক্ষায় একযোগে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন।

চীনের বার্তাসংস্থা সিনহুয়া জানিয়েছে, প্রবন্ধে শি জিনপিং আবারও চীনের অবস্থান তুলে ধরে বলেন— “বাণিজ্যযুদ্ধ ও শুল্কযুদ্ধ কারও জন্যই সুফল বয়ে আনে না, আর প্রোটেকশনিজম অর্থহীন।”

২০২৪ সালে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার মধ্যে চীনা পণ্যের সবচেয়ে বড় ক্রেতা ছিল ভিয়েতনাম। দেশটি গত বছর চীনের কাছ থেকে ১৬১.৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের পণ্য কিনেছিল। এরপরই ছিল মালয়েশিয়া—১০১.৫ বিলিয়ন ডলার।

প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক দৃঢ় হলে যুক্তরাষ্ট্রের বাজার সংকোচনের নেতিবাচক প্রভাবও চীন কিছুটা মোকাবিলা করতে পারবে বলে মনে করছে বেইজিং। সোমবার ও মঙ্গলবার শি জিনপিং ভিয়েতনামে অবস্থান করবেন। ২০২৩ সালের ডিসেম্বরের পর এটিই তার প্রথম ভিয়েতনাম সফর।

কমিউনিস্ট শাসিত চীন ও ভিয়েতনামের মধ্যে ঘনিষ্ঠ অর্থনৈতিক সম্পর্ক থাকলেও দক্ষিণ চীন সাগরে বেইজিংয়ের আগ্রাসী ভূমিকা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের মতোই উদ্বেগ প্রকাশ করে আসছে হ্যানয়। মূলত দক্ষিণ চীন সাগরের প্রায় পুরোটা নিজের এলাকা বলে দাবি করে চীন। তবে এ দাবির বিরোধিতা করে ফিলিপাইন, মালয়েশিয়া, ভিয়েতনাম, ইন্দোনেশিয়া ও ব্রুনাই।

সোমবার প্রকাশিত প্রবন্ধে শি জিনপিং বলেছেন, চীন ও ভিয়েতনাম আলোচনার মাধ্যমে এসব বিরোধ নিরসন করতে সক্ষম। তিনি লেখেন, “আমরা মতপার্থক্যগুলো যথাযথভাবে মোকাবিলা করতে পারি এবং আমাদের অঞ্চলের শান্তি ও স্থিতিশীলতা রক্ষা করতে পারি।”

ভিয়েতনাম সফর শেষে মঙ্গলবার থেকে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত মালয়েশিয়া সফর করবেন প্রেসিডেন্ট জিনপিং।

সূত্র: ঢাকা পোস্ট
এনএন/ ১৪ এপ্রিল ২০২৫


Back to top button

দয়া করে ওয়েবসাইটে বিজ্ঞাপনের অনুমতি দিন

দেখে মনে হচ্ছে আপনি কোনও বিজ্ঞাপন ব্লকার ব্যবহার করছেন। আমরা বিজ্ঞাপনের উপর ভরসা করি ওয়েবসাইটের ফান্ডের জন্য